স্টাফ রিপোর্টার ॥
কাল শনিবার রংপুর কালেক্টর ঈদগাঁ মাঠে বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে মঞ্চ প্রস্তুত করাসহ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিএনপি। তবে সমাবেশের আগের দিন শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে জেলা মোটর মালিক সমিতি। বিএনপি নেতারা বলছেন সমাবেশ বানচাল করতে সরকারের নীল নকশার প্রকাশ পরিবহন ধর্মঘট। তবে শত বাধা সমাবেশ বানচাল করতে পারবে না বলে জানান বিএনপি নেতারা। তারা বলেন সমাবেশকে ঘিরে জনস্রোতে পরিণত হবে রংপুর নগরী।
এদিকে বিভাগীয় সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে বেশ কয়েকদিন থেকেই মাঠে নেমে পড়েছে জেলা ও মহানগর বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনগুলো। বিভাগের আট জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সভা সমাবেশের মাধ্যমে দলের নেতাকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করা হয় বিভাগীয় সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য। জোরেশোরেই চলে প্রচার-প্রচারণাও। রংপুর নগরীর থেকে শুরু করে ৮ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে লাগানো হয় ব্যানার-ফেস্টুন। তবে প্রথমদিকে রংপুর জিলা স্কুল ময়দান এর অনুমতি চেয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে আবেদন করে বিএনপি তবে জেলা স্কুল মাঠের ও মাঠে সমাবেশ করার অনুমতি না দিলেও মৌখিকভাবে রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ ময়দানে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়। মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু অভিযোগ করেন, জিলা স্কুলের মাঠ বরাদ্দ চেয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে আবেদন করা হলেও এখনো কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে কালেক্টরেট ইদগা ময়দানে সমাবেশ করার মৌখিক অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। লিখিত অনুমতি না দিলেও কালেক্টরেট ময়দানেই বিএনপি’র বিভাগীয় সমাবেশ হবে বলে জানান বিএনপির এই নেতা। এদিকে বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছে দলটি। এরইমধ্যে মঞ্চের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
এদিকে সমাবেশের একদিন আগেই পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতি। অবৈধ যানচলাচল বন্ধের দাবিতে শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে এ শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলবে এ ধর্মঘট। বৃহস্পতিবার বিকেলে ধর্মঘটের বিষয়টি নিশ্চিত করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে রংপুর জেলা মটর মালিক সমিতির সভাপতি একেএম মোজাম্মেল হক।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মহাসড়কে জান-মালের নিরাপত্তার জন্য পরিবহন মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার আইন করেছে। কিন্তু রংপুরের বিভিন্ন মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কগুলোতে এখনও নছিমন, করিমন, ভটভটিসহ
বিভিন্ন অবৈধ যানবাহন নিবিঘেœ চলাচল করছে। এজন্য প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা । এমন অবস্থায় মহাসড়কে এসব যান চলাচল বন্ধের জন্য বিভিন্ন সংগঠন মিলে সভা করে শুক্রবার ভোর থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রংপুরের সকল রুটে পরিবহন
ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছে।
মটর মালিক সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমরা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে নছিমন, করিমন, ভটভটি বন্ধের জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধওে
সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্ত এই দাবিগুলো সরকার বাস্তবায়ন করছে না। তাই দাবি আদায়ের জন্য বুধবার সন্ধ্যায় মটর মালিক সমিতি, ট্রাক মালিক সমিতি, কার-মাইক্রোবাস মালিক সমিতি ও সাধারণ পরিবহন মালিকদের
বৈঠকে ধর্মঘটের এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তিনি জানান, মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে মহাসড়কে থ্রি-হুইলার, নসিমন, করিমনসহ লাইসেন্সবিহীন ও অন্যান্য অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধের এবং রংপুর-কুড়িগ্রাম সড়কে হয়রানির প্রতিবাদে শুক্র ও শনিবার বাস, মিনিবাস,
ট্রাক ও মাইক্রোবাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
এদিকে ধর্মঘটের আশঙ্কা করে আগে থেকেই রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপি’র নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেছেন। বিএনপি যেকোনো উপায়ে গণসমাবেশ সফল করতে নেতাকর্মীরা নিজ নিজ উপায়ে মাঠে অবস্থান করছেন।
এদিকে রংপুর বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু ধর্মঘট আহবানের ব্যাপারে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন সরকারের নির্দ্দেশে রংপুর জেলা মটর মালিক সমিতি গোপনে সভা করা দেখিয়ে মহাসমাবেশ বানচাল করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এ ধর্মঘট আহবান করেছে। তবে এসব করে জনতার বিস্ফোরন ঠেকানো যাবেনা। আমরা আগে থেকে এ ধরনের ধর্মঘটের বিষয়টি মাথায় রেখে নেতা কর্মীদের আসার কথা বলে দিয়েছি।
এদিকে রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে বিএনপির মহাসমাবেশের কাজের প্রস্তুতি দেখতে এসে বৃহসপতিবার দুপুরে মহাসমাবেশের সমন্ময়ক
বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব হারুনর রশীদ এমপি আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে পাল্টা হুমকি দিয়ে বলেছেন উনি বলেছেন ১০ ডিসেম্বর খেলা দেখাবেন কিন্তু তার আগেই আগামী শনিবার ২৯ অক্টোবর
রংপুরের মহাসমাবেশে বিএনপি খেলা দেখাবে। এখানে ওই দিন স্মরন কালের বৃহত্তম মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে এর মধ্য দিয়ে প্রমানিত হবে সারা দেশের মানুষ বিএনপির সাথে আছে। দেশের জনগন অবিলম্বে এই অবৈধ সরকারের বিদায় চায়। তিনি বলেন এ সরকার দেশ পরিচালনায় চরম ভাবে ব্যার্থ হয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষ পত্রের অস্বাভাবিক মুল্য বৃদ্ধির কারনে যে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে এর জন্য দায়ি বর্তমান অবৈধ সরকার। দ্রব্য মুল্যের উর্ধগতির কারনে মানুষের জীবন যাত্রার মাঝে যে সংকট তৈরী হয়েছে সে কারনে দেশের জনগন এখন সরকারের প্রতি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাছাড়া এই সরকার তো বৈধ নয় তারা দিনের ভোট রাতে চুরি করে ক্ষমতায় এসেছে।
এ সময় রংপুর মহানগর বিএনপির আহব্য়াক শামসুজ্জামান শামু বিএনপি, নেত্রী রেবেকা সূলতানা ফেন্সি , রইছ আহাম্মেদ সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ তার সাথে ছিলেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন রংপুরে বিভাগীয় মহাসমাবেশ বানচাল করার জন্য বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্যান্য স্থানের মতো রংপুরেও পরিবহন ধর্মঘট আহবান করা হয়েছে । তিনি বলেন দেশের জনগন এখন বিএনপির পক্ষে ফলে যে কোন ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে মানুষ মহাসমাবেশে যোগ দেবে বলে জানান তিনি।