নিজস্ব প্রতিনিধি
বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় সদর উপজেলা পরিষদের বিআরডিবি সম্মেলন কক্ষে স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ও ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম-SEIP এর উদ্যোগে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
সামাজিক প্রচার কর্মসূচি হিসেবে এই কর্মশালায় উপজেলার জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও গণমাধ্যম কর্মী ছাড়াও প্রশাসনের কর্মকর্তারা অংশ নেন এই কর্মশালায়।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান – মোছাঃ নাসিমা জামান ববি। এবং কর্মশালা সভাপতিত্ব করেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা-রংপুর সদর রংপুর মোছাঃ নুর নাহার বেগম,
প্রধান আলোচক বলেন আমাদের দেশের বড় সম্পদ হচ্ছে মানব সম্পদ, এই মানব সম্পদকে যথাযথ প্রশিক্ষণের আওতায় এনে উৎপাদনমূখী কর্মে সম্পৃক্ত করতে পারলেই দেশ উন্নত হবে।
অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন, বিসিসি এক্সপার্ট একেএম মঞ্জুরুল হক, এবং ফিল্ড মনিটরিং অফিসার আখিরুজ্জামান খান।
অনুষ্ঠানে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট জানান্ ৩১ মে ২০২২ পর্যন্ত ৫ লক্ষ ৬৯ হাজার ৪৬৯ জনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে, তার মধ্যে ৫ লক্ষ ৮০২ জন সফলভাবে প্রশিক্ষণ শেষ করেন,শেষে ৩ লক্ষ ৫৫ হাজার ৪৪ জনকে চাকরি প্রদান করেছে SEIP ।
এ সময় বলে আয়তনের দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ৯৪তম। কিন্তু জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ বিশাল
কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী। বাংলাদেশ এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড কাল অতিক্রম করছে। বর্তমানে ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী জনসংখ্যা ৬৬ শতাংশ। ২০৩০ সালের মধ্যে এ বয়সের জনসংখ্যা ৭০ শতাংশে উন্নীত হবে এবং পরবর্তীতে তা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেতে শুরু করবে।
এ সুযোগ জাতীয় জীবনে বারবার আসে না। তাই ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সদ্ব্যবহারে উপযুক্ত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা জরুরি।
বর্তমান সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে গত এক যুগ ধরে দেশের অর্থনীতি ধারাবাহিকভাবে প্রবৃদ্ধি অর্জন করে চলেছে।
২০৪১ সালের মধ্যে
বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ ও সম্পদশালী দেশে রূপান্তরের যে লক্ষ্য বর্তমান সরকার নির্ধারণ করেছে তা অর্জন করতে হলে আমাদের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারাকে আরো বেগবান করতে হবে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা ত্বরান্বিত করতে দেশের বিপুলসংখ্যক কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
দেশের কর্মক্ষম জনসংখ্যাকে দক্ষ জনশক্তি রূপান্তরিত করতে না পারলে আমাদের কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে,গড়ে অন্তত ২০ লাখ মানুষ দেশের শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে। এর গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে সরকার নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।২০৩০ সালের মধ্যে সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কাজ এগিয়ে চলছে।এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রায় ১ কোটি মানুয়ের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
তাই বিদেশে ভালো কাজ ও উন্নত বেতনের জন্য অবশ্যই দক্ষকর্মী পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। সফলভাবে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানসম্পদে রূপান্তরের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন, টেকসই উন্নয়ন ও ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে স্থান করে দেয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ কাজ করছে।
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি নারী। বিশাল এই জনগোষ্ঠীকে অর্থনৈতিক মূলধারার বাইরে রেখে দেশের সার্বিক অগ্রগতি অর্জন কখনই সম্ভব না।
বিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়ে কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করার জন্য প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে নারীদের অগ্রাধিকার প্রদান করা হচ্ছে এবং কমপক্ষে ৩০ শতাংশ
নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হচ্ছে।
এছাড়াও, সুবিধাবঞ্চিত মানুষ যেমন: ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী, চর ও হাওরসহ দুর্গম এলাকার অধিবাসীসহ অনগ্রসর
জনগোষ্ঠীকে (বেদে, সাপুরে, হিজরা, জেলে, মুচি, সুইপার) প্রশিক্ষণে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণ চলাকালে এসব জনগোষ্ঠীকে প্রশিক্ষণ ভাতার পাশাপাশি কমপক্ষে এক লক্ষ জনকে বিশেষ বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। সফলভাবে প্রশিক্ষণ সম্পন্নকারীদের চাকুরি পেতে সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।
যারা এই প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন,
* বয়সসীমা ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নারী ও কর্মক্ষম যুবক।
* কমপক্ষে ৩০ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত।
* ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি প্রতিবন্ধী ও সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠী,
(যেমন বেদে,জেলে,সাপুড়ে, মুচি,দলিত এবং দুর্গম এলাকা যেমন হাওর চর অঞ্চলের জনগন ইত্যাদি দের কে অগ্রাধিকার দেয়া হয়।